জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির পরিবর্তে বায়োমেট্রিক বা আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমানের নারীরা।
তাদের আরেকটি দাবি, সরকারী অফিস বা কার্যালয়ে পর্দানশীন মহিলাদের সাথে যোগাযোগ/আদান-প্রদান বা সনাক্তকরণের জন্য মহিলা কর্মকর্তা/কর্মচারির ব্যবস্থা রাখা হোক।
গতকাল সোমবার ঢাকার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে মহিলা আনজুমানের নারীরা তাদের কেন তারা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র চান এবং পরিচয়পত্র না থাকার ফলে কি কি সমস্যায় পড়েন সেগুলো তুলে ধরেন।
ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমান হচ্ছে মহিলাদের জন্য একটি তালিমী মজলিস, যেখানে অনেক মহিলা প্রতিনিয়ত কুরআন শরীফ ও সুন্নাহর তালিম গ্রহণ করে থাকেন।
মহিলা আনজুমান, রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষে সদস্য শারমিন ইয়াসমিন বিবিসি বাংলাকে বলেন এই মহিলারা প্রত্যেকেই পর্দানশীন, যারা পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করেন।
উপস্থিত নারীরা
তিনি বলেন “তারা কোন গায়েরে মাহরামকে চেহারা দেখান না। অথচ রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ করার সময় সনাক্ত করার জন্য চেহারা খুলে ছবি তুলতে হয় এবং গায়েরে মাহরাম পুরুষকে তার চেহারা দেখিয়ে নিশ্চিত করতে হয়, এটি তার ছবি। পর্দানশীন হওয়ায় এসব মহিলারা চেহারা খুলে ছবি তুলছেন না বা গায়েরে মাহরাম পুরুষকে চেহারা দেখাচ্ছেন না”।
“এতে তারা জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কোন সরকারী কাগজ তৈরী করতে পারছেন না এবং কোন নাগরিক অধিকারও লাভ করতে পারছেন না। পরিস্থিতি বেশি জটিল হয়ে উঠছে বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা মহিলা বা প্রবাসীদের স্ত্রীদের জন্য। কারণ সামান্য সহযোগিতার জন্য তারা নিকটস্থ মাহরাম পুরুষকে কাছে পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় সন্তান-সন্ততি নিয়ে জীবন ধারণ তাদের জন্য বেশ জটিল হয়ে উঠেছে”।
জাতীয় পরিচয় পত্র তারা করেন নি। ফলে সরকারের কোন সুযোগ-সুবিধা তারা পাচ্ছেন না।
জাতীয় পরিচয় পত্র তারা করেন নি। ফলে সরকারের কোন সুযোগ-সুবিধা তারা পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশে সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হয়। তারা বলছেন, পর্দা করা যেমন তাদের অধিকার তেমনি রাষ্ট্রীয় সব সুযোগসুবিধা পাওয়াও তাদের অধিকার।
এদিকে চলতি মার্চ মাসের ছয় তারিখে ছবি ব্যবহার না করে বিকল্প বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক নারীর রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ এ রুল দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অগ্রগতি হয় নি।
বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির ক্ষেত্রে ছবি ছাড়া শুধু আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে করা যায় কিনা – এ বিষয়ে জানার জন্য নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র উইং এর মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবির বলেন “যেহেতু বিষয়টি আদালতে উঠেছে, এই মুহূর্তে এই বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন মনে করছি না”।
সুত্রঃ বিবিসি বাংলা
2 comments
রাষ্ট্রে আইন মানা বা মেনে প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তৃব্য। তাই ছবিহীন আইডিকার্ডে দাবী সর্ম্পূণ অযৌত্তিক এটা মানার কোন প্রশ্নই আসে না
রাষ্ট্রীয় সব সুযোগসুবিধা পাওয়াও তাদের অধিকার ঠিক আছে, কিন্তু রাষ্ট্রের দেওয়া আইন-কানুন মেনে আইডিকার্ড করাও তাদের দায়িত্ব