ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এবার এক স্কুলছাত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে আসরা পানাহি (১৬) নামের ওই ছাত্রীর স্কুলে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। তখন ক্ষমতাসীন ধর্মীয় নেতাদের প্রশংসামূলক গান গাইতে অস্বীকৃতি জানালে আসরাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব ইরানিয়ান টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের বরাতে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
এতে করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে টালমাটাল পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটিজুড়ে এই সপ্তাহান্তে আরও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ইরানের একটি স্কুলে অভিযান চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এসময় সেখানে সরকারপন্থি গান গাইতে অস্বীকার করার পর নিরাপত্তা কর্মীরা ওই ছাত্রীকে তার ক্লাসরুমের মধ্যেই মারধর করে এবং এতে সে মারা যায়।
ইরানের কোঅর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব ইরানিয়ান টিচার্স ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আরদাবিল শহরের শাহেদ গার্লস হাই স্কুলে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এসময় তারা একদল মেয়ে শিক্ষার্থীকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রশংসা করে এমন একটি গান গাওয়ার আদেশ দেয়।
শিক্ষার্থীরা সেই আদেশ প্রত্যাখ্যান করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের মারধর করে। এতে অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী আহত হয় এবং পরে তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এছাড়া অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর মারধরে আহত ১৬ বছর বয়সী আসরা পানাহিকেও হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পানাহি মারা যায় বলে জানা গেছে।
এদিকে এই ঘটনায় ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন কর্মকর্তারা। আসরার মৃত্যুর পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যু হলে ইরানের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে স্কুলের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা হিজাব উড়িয়ে ও ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্কুলে অভিযান পরিচালনা করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। অনেক স্থানে স্কুলের শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা, তাদের বিভিন্ন শাস্তি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।