পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে আগুন, লুটপাট ও তাদের উপর হামলার ঘটনায় স্থবির পুরো আহম্মদনগর। ঘটনার দিন সবাই জলসা প্রাঙ্গনে আশ্রয় নিলেও বর্তমানে তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা নিরাপত্তার শঙ্কায় এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। একদিকে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় যেমন তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তেমনই নিরাপত্তা শঙ্কা থেকে স্বস্তি পেতে তারা এলাকা ছাড়ছেন বলে জানা গেছে।
তাদের অভিযোগ, হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিলো নারীদের উপর আক্রমণ করা এবং ঘরবাড়ি লুটপাট করা। বিষয়টি টের পাওয়ার পর তারা সবাইকে জলসা মাঠে রাখতে নির্দেশনা দেন। কয়েকদিন সেখানে থাকার পর এখন তারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সোনাচান্দি এলাকার আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালমা বেগম বলেন, রাত হলেই আমাদের চিন্তা ও শঙ্কা বাড়ে। কখন কোন পাশ দিয়ে তারা হামলা করে এই ভয়ে থাকি। গতকাল রাতেও গুজব ছড়িয়ে তারা হামলা করেছিল। সারারাত সন্তানদের নিয়ে ঝোপ ঝাড়ে রাত কাটিয়েছি। আমি তাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দিলেও আমার বাড়িটি তারা পুড়ে দিয়েছে। আমরা আমাদের মেয়ে ও নারী সদস্যদের নিয়ে চিন্তিত। পুলিশ থাকার পরও তারা দফায় দফায় হামলা করেছে। আমরা এদেশের নাগরিক হয়েও সহযোগিতা পাচ্ছি না। তাই আমরা নারীরা এবং আমাদের মেয়ে সন্তানদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছি।
মাসুদ রানা নামে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের আরেক যুবক বলেন, নিরাপত্তার ভয়ে আমাদের পরিবারের নারী সদস্যের বাড়িতে রাখতে ভয় পাচ্ছি। তাই তাদের নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। আর আমরা বাড়িতে থাকলেও রাত হলেই ভয় বাড়ে। গত তিন দিন ধরে আমরা ঘুমাতে পারি না।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য পুরো আহম্মনগরসহ যেখানে যেখানে তাদের বসতি রয়েছে সেখানে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গুজব ছড়িয়ে যারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুত্রঃ কালেরকন্ঠ