কুমিল্লার দেবিদ্বারে দশম শ্রেণির একছাত্রীকে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ ২টি বাইক পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে জনতা-পুলিশ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এত অন্তত ৫ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত ও অন্তত: ১০জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুর থেকে রাত অবধি দেবিদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার সকালে প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ও পরে দ্বিতীয় দফা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রধানশিক্ষক মো. মোকতল হোসেন দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। ওই ঘটনা ছাত্রীর সহপাঠিরা দেখে ফেললে তাকে নিয়ে বাড়ি যেয়ে তার বাবার কাছে ঘটনা বর্ণনা দেয়। এদিকে ঘটনাটি জানাজানির পর দুপুর থেকে রাত অবধি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। এসময় প্রধান শিক্ষককে রক্ষায় তার পক্ষে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে ছাত্রদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫-২০জন শিক্ষার্থী আহত হয়। ছাত্র আহতের ঘটনায় পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
প্রধানশিক্ষক মোকতল হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, দুর্ব্যবহারসহ একাধিক অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবক আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভে অংশ নেন। খবর পেয়ে দেবিদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্য, শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগীতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান। বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধানশিক্ষককে স্কুল মাঠে এনে বিচারের দাবী জানায়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা বিদ্যালয়ের দরজা-জানালা ও প্রধান ফটক ভাংচুরের চেষ্টা করে এবং প্রধান শিক্ষকের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিসহ দুইটি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
রাত পৌনে ৯টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ‘অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনে জনতা ওই শিক্ষককে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে রাতে আমরা তাকে উদ্ধার করি।
সুত্রঃ রাইজিং বিডি