ভারতের মণিপুর রাজ্যে যেই দুই নারীকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের একজনের মা ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, তারা আর নিজেদের গ্রামে ফিরে আসতে চান না। তিনি আরও জানান, তার স্বামী ও ছোট ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
ভুক্তভুগী নারীর মা গভীরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। তিনি কয়েক মিনিটের বেশি কথা বলতে পারেননি। তিনি অভিযোগ করেন মণিপুর সরকার সহিংসতা বন্ধ করতে বা মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার ছোট ছেলেকে হারিয়েছি, যে আমার পুরো আশা ছিল। আমি আশা করেছিলাম যে সে দ্বাদশ শ্রেণী শেষ করবে এবং অনেক কষ্ট করে, আমি তাকে সঠিক শিক্ষার জন্য স্কুলে পাঠিয়েছি। এখন তার বাবাও আর বেঁচে নেই। আমার বড় ছেলের চাকরি নেই। তাই, যখন আমি আমাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি, তখন আমার মনে হয় কোনো আশা নেই। আমি আশাহীন ও অসহায় বোধ করছি, এটা বলা ছাড়া আমার মাথায় কিছুই আসছে না।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভুক্তভোগীরা ঘটনার পর তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্য জেলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানকার থানায় গিয়ে নির্যাতনের শিকার এক নারীর স্বামী লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু সেই অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট থানায় আসতে সময় নেয় এক মাসের বেশি।
মণিপুরের সহিংসতার একটি ভিডিও বুধবার রাতে ভাইরাল হয়, সেটি আড়াই মাস আগের। গত ৩ মে উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের হিন্দু মেইতি ও খ্রিষ্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। পরদিন ৪ মে ওই ভিডিও ধারণ করা হয়। তাতে দেখা যায়, দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সশস্ত্র একদল উন্মত্ত জনতা। রাস্তা দিয়ে খানিকক্ষণ হাঁটিয়ে ওই দুই নারীকে একটি মাঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, সেই মাঠে প্রকাশ্যে ওই দুই নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
এই যৌন নির্যাতনের ভিডিও বুধবার রাতে প্রকাশ হওয়ার পর ভারতজুড়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। এই যৌন নিপীড়নের মামলার প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়িতে গতকাল হামলা চালানো হয়েছে। রাজ্যের নারীরা এ হামলা চালিয়েছে। অঞ্চলটিতে আন্দোলনরত নারীরা এ হামলা চালায়।
সুত্র: দৈনিক ইত্তেফাক