ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে চুরির অপবাদে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে সালিশি সভায় প্রকাশ্যে এক নারীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে দুই ইউপি সদস্যকে আটক করেছে থানা পুলিশ। শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। রবিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা ও একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হোসেন মিয়া। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী শনিবার রাতেই ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদে গত বৃহষ্পতিবার অভিযুক্তরা শারমীন আক্তারকে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের হুমায়ুনের বাড়িতে ডেকে নেয়। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পরই শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। এসময় ইসহাক মোল্লা তার নাক, মুখ ও চোখে গামছা বেঁধে শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম পানি ঢেলে দেয়। লাঠি দিয়ে হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে জখম করে। পরিহিত কাপড় টেনে হিঁচড়ে যৌন নিপীড়ন করে।
বিজয়নগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান জামিল খান জানান, কয়েকদিন আগে বিষ্ণুপুরের এক চৌকিদারের স্ত্রীকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। পরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার নির্দেশে বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন ওই নারীকে ব্যাপক মারধর করে। চৌকিদারের স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে ভিডিও ফুটেজ দেখে সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা জানান, একটি বাড়িতে স্বর্ণালংকার চুরি ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সালিশি সভা হয়। সালিশি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই নারীকে মারধর করা হয়েছে। এই বিষয়ে অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি এই বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।