রংপুরের মিঠাপুকুরে বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে ৭ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বালুচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান উত্তেজিত জনতা।
এ সময় বেফাঁস মন্তব্য করায় মিঠাপুকুর থানার ওসিকে প্রায় ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় জনতা।
রোববার বিকালে দিকে এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
হত্যার শিকার শিশু আকলিমা আক্তার (৭) উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আরিফুল দম্পতির একমাত্র সন্তান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যার আগে শিশুটির ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় প্রতিবেশী এক কাঠমিস্ত্রি ফজলু মিয়া (৪৫)। শিশুটির পরিবারের লোকজনের ধারণা প্রতিবেশী ফজলু মিয়া কন্যা শিশুটিকে ধর্ষণের পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে নির্মমভাবে হত্যা করে বালু চাপা দেন।
একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ। স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত ফজলু মিয়াকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত ফজলুর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে গাছপালা কেটে ফেলেন।
এ সময় আপত্তিকর মন্তব্য করায় মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিককে ধাওয়া করে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখেন জনসাধারণ। পরে পুলিশ সুপার, ইউএনও সেনাবাহিনী, র্যাব ও সিআইডির সহযোগিতায় ওসি আবু বকর সিদ্দিককে উদ্ধার করা হয়।
শিশুটির বাবা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি কাজ করছিলাম। একজন আসি কইলো দেখো তোমার বেটির কী হইছে। যায়া দেখ্যো মোর বেটিক মারি বালা দিয়া ঢাকি থুইছে। মুই কি করিম। মোর বেটিক যেংকা করি কষ্ট দিয়া মারছে উয়্যাকও (অভিযুক্তকে) একইভাবে কষ্ট দিয়া মারা নাগবে।
স্থানীয় জনসাধারণ বলেন, ফজলুল যেভাবে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করছে, তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। খুব দ্রুতই এত ঘটনার বিচার নিশ্চিত করে প্রশাসনকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ধর্ষকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে আমি বাধা দিয়েছিলাম। এ কারণে এলাকাবাসী আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডারসহ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতাকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে শান্ত করা হয়। সিআইডি টিম শিশুটির স্যাম্পল সংগ্রহ করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করে থানায় আনা হয়।
সুত্র: দৈনিক যুগান্তর