দ্বিতীয় দফা ক্ষমতায় এসে যুযোপযোগী শাসনব্যবস্থার কথা বললেও একে একে নারীর অনেক অধিকারই কেড়ে নিয়েছে তালেবান। যদিও নারীদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। তালেবানরা দাবি করেছিল ইসলামে নারীদের যে স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই স্বাধীনতা তারা রক্ষা করবে। ইসলামে নারীদের বাইরে কাজ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সেটা কোনও ভাবেই লঙ্ঘিত হতে দেবে না তারা। তবে বর্তমানে নারীদের ক্ষেত্রে তালেবানদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
জার্মান ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলেতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ২৬ ডিসেম্বর দেশটির নারীদের উপর নতুন করে নির্দেশনা আরোপ করেছে তালেবানরা। সেগুলো হল…
একা একা দূরে নয়
আফগানিস্তানের নারীরা ৭২ কিলোমিটারের (৪৫ মাইল) চেয়ে বেশি দূরে একা যেতে পারবেন না। যেতে হলে সঙ্গে কোনো পুরুষকে রাখতে হবে।তালেবান মিনিস্ট্রি ফর প্রোপাগেশন অফ ভার্চু অ্যান্ড দ্য প্রিভেনশনস অফ ভাইস এক নির্দেশনায় কোনো চালক যাতে কখনো একা দূরে যেতে আগ্রহী নারীকে গাড়িতে না তোলেন সেই কথাও বলা হয়েছে।
গৃহনির্যাতন মেনে নিতে হবে!
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, তালেবান মিনিস্ট্রি ফর প্রোপাগেশন অফ ভার্চু অ্যান্ড দ্য প্রিভেনশনস অফ ভাইস-এর নির্দেশনায় গৃহ নির্যাতনের স্বীকার হলেও নারীদের স্বামীর সংসার ছেড়ে না যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
টেলিভিশনে, মুভিতে চেহারা দেখানো যাবে না
টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে নারীদের চেহারা দেখানোও সীমিত করেছে তালেবান। এই নির্দেশের ফলে কোনো নারী আর টিভি শো, নাটক বা চলচ্চিত্রে অংশ নিতে পারেন না। বিশেষ ক্ষেত্রে অংশ নিলেও নারীকে অবশ্যই হিজাব পরতে হয়।এক প্রতিবেদনে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর অনেক নারীই মিডিয়া ছেড়েছেন।
নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় অবলুপ্ত
২০০১ সালে নারীদের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় খুলেছিল তখনকার সরকার।২০২১ সালে ক্ষমতায় এসে সেই মন্ত্ণালয় বন্ধ করেছে তালেবান। ওপরের ছবিতে কাবুলের এক বেকারির সামনে দরিদ্র নারীদের মধ্যে রুটি বিতরণের দৃশ্য। রুটি দিচ্ছেন এক সাধারণ নাগরিক।
শিক্ষার সুযোগ সীমিতকরণ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) অক্টোবরের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফগানিস্তানে প্রাইমারির ওপরে মেয়েদের প্রায় সব স্কুলই বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান। এর ফলে মেয়েদের উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ কমে গেল।
নারী-পুরুষ একসঙ্গে নয়
গত আগস্টে আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারের দখল নিয়েই সেখানকার বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়ে নারীদের বের করে দেয় তালেবান।পরে অন্যান্য শহরেও নারীদের কর্মস্থল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে তারা। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তালেবানের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, তারা মনে করেন, আফগান নারীদের পুরুষদের সঙ্গে বসে কাজ করা উচিত নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষাক-বিধি
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তালেবানের শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষকে আলাদা বসতে হবে এবং সবাইকে ‘ইসলামি পোশাক’ পরতে হবে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
6 comments
যেই মানুষগুলো তালেবানদের বিপক্ষে তাদের চেহারা সুরত একটু খেয়াল করেন। এরা স্বাভাবিকভাবেই ইসলামি আইন মানবে না এরা প্রাচ্যের প্রগতিশীল হবে আর প্রাচ্যের সরকার নিউজ সব তাদের পক্ষেই হবে। এটা খুবই সাধারণ আর চিরাচরিত বিষয়।
কেউ কি একটি সত্যি কথা বলতে পারবেন, মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে একটি ছেলের বা একটি মেয়ের ভবিষ্যত কি তাদের জন্য কত মাদ্রাসা আর কত মসজিদ আর কত মোক্তব তৈরি করতে হবে?
তালেবান মনে করে আফগান নারীদের পুরুষদের সঙ্গে বসে কাজ করা উচিত নয়, এটা যদি বন্ধ হয় তাহলে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না তারা
ইসলামিক আইন মুসলিম নারীদের জন্য নিরাপদ ও কল্যাণকর, ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করবেন না
নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে তালেবানরা এটাই প্রত্যাশা করি।
তাদের দেশের জনগণ তাদের সাথে না থাকলে এত কম সময়ে এত বড় জয় তালেবান করতে সক্ষম হত না। আপনারা সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে কেন খবর প্রচার করেন?