রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেবাংশু কুমার সরকারের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে তার স্ত্রী ডা: হৃদিতা সরকারের করা মামলা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টিগেশন-পিবিআিইকে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার বিকেলে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১-এর বিচারক মোস্তফা কামাল বাদির জবানবন্দি রেকর্ডের পর এই আদেশ দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর বিচারক রোকোনুজ্জামানের আদালতে মামলাটি করেছিলেন ডা: হৃদিতা সরকার। সেদিন বিচারক অভিযোগটি গ্রহণ করে ২১ এপ্রিল বাদির জবানবন্দি রেকর্ডের দিন ধার্য করেছিলেন। ২১ এপ্রিল ট্রাইবুনাল-২ জবানবন্দি রেকর্ড না করে ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য করেছিলেন। রোববার ট্রাইবুনাল-১-এর বিচারক জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিলেন।
মামলার বাদির আইনজীবি এবং রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিশেষ পিপি খন্দকার রফিক হাসনাইন জানান, মামলায় স্ত্রী ডা: হৃদিতা সরকার জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট দেবাংশু কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট রংপুর জজ শিপের স্টাফ কোয়াটারের নিচ তলায় সকাল ৮টায় তাকে মারপিট এবং চলতি বছর ২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে নতুন গাড়ি ক্রয়ের জন্য ৩০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে গুরুতর জখম করেছে ও ছোরা মেলেছে। গলায় আঘাত করেছে। তাকে ৯টি সেলাই দিতে হয়েছে। এ কারণে তিনি হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। নির্যাতনের কারণে বাদি তার শ্রবণ শক্তি হারিয়েছেন। এছাড়াও মামলায় ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে মদ্যপ-নেশাগ্রস্ত এবং জুয়াড়ি হিসেবে দাবি করেছেন তার স্ত্রী। মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, বিষয়টির ব্যাপারে রংপুরের একাধিক বিজ্ঞ বিচারক ছাড়াও জেলা জজ এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অবগত আছেন। অভিযোগে শ্বশুর সুধাংশু কুমার সরকার, স্বামীর পিসাতো ভাই নিলয় দে সরকার এবং চাচা শ্বশুর রঞ্জণ সরকারকেও আসামি করা হয়েছে।
পিপি আরো জানান, বাদি ১৯ এপ্রিল রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর বিচারক রোকনুজ্জামানের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক)-(খ) / ৩০-সহ দণ্ডবিধি ৩২৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালত বাদির জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। ওইদিন বিচারক শুনানি গ্রহণ করেননি। পরে নতুন দিন ধার্য করেছিলেন ২৪ এপ্রিল। সেই আলোকে রোববার ট্রাইবুনাল-১-এর বিচারক মোস্তফা কামাল ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী বাদির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন।
তিনি বলেন, বাদি তাকে জানিয়েছেন, আদালত এবং পিবিআইয়ের ওপর তার আস্থা রয়েছে। তিনি সুষ্ঠু-সঠিক-নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায় বিচার পাবেন।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত