খুলনার ডুমুরিয়ায় উত্ত্যক্তকারীর হাত থেকে বাঁচতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একজন পরিদর্শকের (ইন্সপেক্টর) সাহায্য চেয়েছিলেন এক কলেজছাত্রী। তবে সাহায্যের পরিবর্তে ওই ইন্সপেক্টর তাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই তরুণী।
রোববার (১৫ মে) দুপুরে খুলনা মহানগরীর ছোট মির্জাপুরে একটি পত্রিকা অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই তরুণী। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন ওই কলেজছাত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি সংক্রান্ত একটি সমস্যা নিয়ে পাঁচদিন আগে তিনি পিবিআই ইন্সপেক্টর মনজুরুল আহসান মাসুদের কাছে যান। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কাগজী হাউজের ওই পত্রিকা অফিসের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন এবং সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় আজ দুপুরে লিখিত অভিযোগ দেন ওই তরুণী।
অভিযোগ পাওয়ার পর মেয়েটিকে নিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার (খুলনা জোন) ইয়জিদ ইবনে আকবর ও খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় অফিস তালাবদ্ধ থাকায় পুলিশ তালা ভেঙে অফিসে প্রবেশ করে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, ‘মহানগরীর ৯ নম্বর ছোট মির্জাপুর রোডে কাগজী হাউজের ওই বাড়িতে একটি পত্রিকার অফিস রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে পত্রিকার কেউ সম্পৃক্ত আছেন কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই কলেজছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
এ ঘটনায় ওই পত্রিকার খুলনা প্রতিনিধি আবু হেনা মুক্তি জানান, বটিয়াঘাটার মাছ ব্যবসায়ী হাসান তারেক জাকির ও বাচ্চু আলী বেগ নামের দুজনের সঙ্গে তারা যৌথভাবে অফিস ভাড়া নেন। এক পাশে পত্রিকার অফিস ও অন্য পাশে তারা বসতেন।
তিনি আরও জানান, তিনি খুলনার বাইরে ছিলেন। তবে হাসান তারেক জাকির পিবিআই ইন্সপেক্টর মাসুদসহ ওই মেয়েকে নিয়ে অফিসে যায় বলে তিনি শুনেছেন। জাকিরের ফোন বন্ধ থাকায় তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি।
ঘটনার পর থেকে পিবিআই ইন্সপেক্টর মনজুরুল আহসান মাসুদ পলাতক।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে খুলনা পিবিআইয়ের এসপি মুশফিকুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জাগো নিউজ২৪.কম