ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার অতিরিক্ত পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই, নিরস্ত্র) সজল মাহমুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মোকদ্দমা দাখিল করেছেন এক নারী। তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলেও জানান ওই নারী।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মো: হাফিজুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ৩৩ বছর বয়সী ওই নারী। তিনি ভাঙ্গা উপজেলার কাপুরিয়া সদরদি গ্রামের জনৈক ব্যক্তির মেয়ে। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন।
মামলার আরজিতে তিনি অভিযোগ করেন, তিনি অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে পরে তিনি দেশে চলে আসেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২০ অক্টোবর তার বাড়িতে চুরি হলে থানায় জানান। গত ২৪ অক্টোবর রাতে এএসআই মো: সজল বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার ছলে তার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে আরো বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। এর এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৩০ জানুয়ারি ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিক্যাল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যান সজল।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি তিনি এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব খুলে বলেন। ওসি মোবাইল ফোনে সজলকে ডেকে আনেন। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি স্বাক্ষর করার পর সজল বলেন, ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছ এবং তালাক দিয়েছ।’ এই বলে তাকে মারপিট করে থানা থেকে বের করে দেন সজল।
ওই নারী বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি বাড়ি এসে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় ভাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে করার পরামর্শ দেয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ বলেন, ওই নারীর সাথে তার বিয়ে হয়েছে, তার কাছে কাবিননামাও আছে। তিনি বলেন, তার আগের স্ত্রী আছে। বড় স্ত্রীর সম্মতিতে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।
তিনি বলেন, ওই নারীকে তিনি তালাক দেননি। তিনি এখনো তার স্ত্রী।
বিস্ময় প্রকাশ করে সজল মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে ওই নারী আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে কেন মামলা দিলেন তা তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো: হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে গত ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশলাইন্সে বদলি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা তারা এখনো পাননি। তবে শুনেছেন এ জাতীয় একটি মামলা হয়েছে।
সুত্রঃ দৈনিক নয়া দিগন্ত