শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ইরানি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি কারাগারে অনশন শুরু করেছেন। কারাবন্দি এই মানবাধিকারকর্মীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তিনি অনশন করছেন।
সোমবার থেকে তিনি অনশন শুরু করেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, হৃদরোগ ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন ৫১ বছর বয়সী নার্গিস মোহাম্মদি। কিন্তু গত সপ্তাহে মাথায় স্কার্ফ পরতে অস্বীকার করায় তাকে হাসপাতালে যেতে দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ।
এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট জানিয়েছে, ইরান সরকারের দুটি নীতির প্রতিবাদে সোমবার থেকে অনশন শুরু করেছেন কারাবন্দি নার্গিস মোহাম্মদি। প্রথমটি হচ্ছে অসুস্থ বন্দীদের চিকিৎসা সেবায় বিলম্ব ও অবহেলা করার সরকারি নীতি এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বাধ্যতামূলক হিজাব আইন।
নার্গিস মোহাম্মদির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেছেন, নার্গিসের হৃদপিণ্ডে তিনটি ব্লক রয়েছে। তিনি ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন। এ অবস্থায় তিনি হিজাব পরতে না চাওয়ায় কারা কর্মকর্তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি। তাকে ওষুধ পর্যন্ত খেতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধু লবণ, পানি ও চিনি খেয়ে বেঁচে আছেন নার্গিস।
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি নার্গিস মোহাম্মদীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কমিটি বলেছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য নারী বন্দিদের হিজাব পরতে বাধ্য করা অবশ্যই অমানবিক ও নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে জনপরিসরে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। আইনটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা থাকলেও এখনো তা বাতিল বা সংশোধন করেনি ইরানের কোনো সরকার।
চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন নার্গিস মোহাম্মদি। দেশটিতে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়।
২০১০ সাল থেকে কারাগারেই কাটছে নার্গিসের দিন। ৫১ বছর বয়সী নার্গিস এখন পর্যন্ত ১৩ বার গ্রেফতার হয়েছেন। পাঁচবার দোষী সাব্যস্ত হওয়া এই মানবাধিকারকর্মীকে ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের’ দায়ে কারাভোগ করছেন।
সুত্র: আরটিভি