আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের ২৬০০ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্তে রয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশ। ২০২১ সালের আগস্টে কাবুলে তালিবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ঐ অঞ্চলে হামলা চালানো হয়। এই সব হামলায় নিহত হয়েছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর শত শত সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক।
এই সহিংসতার অধিকাংশই চালিয়েছে বা এর দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে এই গোষ্ঠীটি তালিকাভুক্ত। তালিবান কর্তৃপক্ষের সমর্থনে এই গোষ্ঠী আফগান অভয়ারণ্য থেকে কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দুই দেশ এই সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি বারবার আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। তাদের সর্বসাম্প্রতিক বৈঠক হয়েছে জানুয়ারির শুরুতে। কিন্তু কোনও পক্ষই সমাধান-সূত্রের খবর দেয়নি। টিটিপির নেতৃত্বাধীন উগ্রবাদী সহিংসতা হ্রাসের বিষয়ে কোনও কূটনৈতিক উদ্যোগ উঠে আসেনি।
এই বিষয়ে জনসমক্ষে মন্তব্য করার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করে পাকিস্তানের এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ভিওএ-কে বলেন, “দ্রুত ফলাফল প্রত্যাশা করবেন না; এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে অনেক ত্রুটি রয়েছে। তবে অবিরত কথোকথন প্রক্রিয়াটিকে সবল করতে সাহায্য করতে পারে।”
তিনি সতর্ক করেছেন, সহিংসতা বৃদ্ধি পেলে ইতোমধ্যে দুই দেশের সমস্যা সঙ্কুল সম্পর্কে মারাত্মক আঘাত হানতে পারে।
এই কর্মকর্তা আরও সতর্ক করেছেন, “এটা নিশ্চিতভাবেই এমন একটা সন্ধিক্ষণে নিয়ে যেতে পারে যখন তালিবানের প্রতি সমর্থন বজায় রাখার ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখতে পারে পাকিস্তানের সরকার।”
পাকিস্তানের ধর্মীয় দলের বিশিষ্ট নেতা মৌলানা ফজলুর রেহমান এই সপ্তাহে আফগানিস্তানে সফর করেছিলেন এবং সেখানকার প্রশাসনিক নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। দুই দেশের অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে টিটিপি নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।
একাধিক সূত্র ভিওএ-কে নিশ্চিত করেছে যে, তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রেহমান; কান্দাহারের দক্ষিণাঞ্চলে হিবাতুল্লাহর সদর দফতরে। তবে, কথিত এই সাক্ষাৎ নিয়ে কোনও পক্ষই মন্তব্য করেনি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালোচ বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে সংবাদদাতাদের বলেন, টিটিপির সঙ্গে শান্তি-বৈঠকে যোগ দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় নেই তাঁর সরকারের।
সুত্রঃ ভয়েস অফ আমেরিকা