আওয়ামী লীগ নেত্রীর সঙ্গে পরকীয়া গড়ে ওঠে পুলিশ কর্মকর্তার। বিয়ের প্রলোভনে শরীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। অবশেষে বিপত্তি ঘটে পুলিশ কর্মকর্তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন রাখা ও বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করার পর।
এ নিয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী পরিচয়দানকারী ওই নারী। তার দাবি, বিয়ের প্রলোভনে তার সম্ভ্রম লুটে নিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা হীরন্ময় সরকার। তিনি সম্প্রতি পিবিআই যশোর সার্কেল থেকে বদলি হয়ে মোংলা থানায় আসেন। দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসাবে। তবে ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার তাকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
যশোর জেলার বাসিন্দা ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী জানান, পিবিআই যশোর সার্কেলে প্রায় ৪ বছর আগে কর্মরত ছিলেন হীরন্ময় সরকার। সেখানে তাদের প্রথম পরিচয়। এরপর উভয়ে গভীর প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। গড়ে ওঠে শারীরিক সম্পর্ক। পুলিশ কর্মকর্তা ওই নারীকে বিয়ের আশ্বাসও দেন।
ভিকটিম অভিযোগ করেন, হীরন্ময় সরকার নিজেকে মুসলমান (হীরন) পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ের আশ্বাস দেন। দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কয়েক বছর তার বাড়ি (যশোর) ও ঢাকায় আত্মীয়স্বজনসহ পরিচিত সবাই ওই নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিতেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে ওই নারী সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন।
বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তা নানা অজুহাত গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে ওই নারীকে বাধ্য করেন। ভুক্তভোগী আরও বলেন, তিনি বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে মোংলা থানায় পরিদর্শকের (তদন্ত) দায়িত্ব নেওয়ার পর হীরনের আচরণ বদলে যেতে থাকে। এমনকি তার সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন হীরন। শেষ পর্যন্ত এ পুলিশ কর্মকর্তার খোঁজে মোংলায় আসেন ভুক্তভোগী। এখানে এসে জানতে পারেন হীরন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী, বিবাহিত এবং তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে।
ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ৯ মে যশোর থেকে মোংলায় এসে একটি হোটেলে তিন দিন অবস্থান করেন ওই নারী। এ সময় পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেন। ১১ মে বিকালে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এতে তিনি পুলিশ কর্মকর্তার হাতে প্রতারণা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের শিকার হন বলে জানান। তিনি দ্রুত এর ন্যায়বিচার দাবি করেন। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তিনি মোংলা থেকে নিজ জেলা যশোর ফিরে যান।
এ বিষয় মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শন (তদন্ত) হীরন্ময় সরকার বলেন, কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। শারীরিক সম্পর্কসহ বিয়ের প্রলোভনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। হীরন্ময় সরকার দাবি করেন, ওই নারী স্রেফ তার বন্ধু ছিলেন, অন্য কিছু নয়।
তবে এ বিষয়ে বাগেরহাট পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান জানান, তিনি একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে রোববার বিকালে হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সুত্রঃ যুগান্তর