নারায়ণগঞ্জের বরপা জঙ্গি আস্তানার প্রধান মো. জাবেদ হোসেনকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) গাজীপুর জেলার টঙ্গী পূর্ব থানাধীন স্টেশন রোড এলাকা থেকে এটিইউ’র একটি দল গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ থানাধীন বরপা জঙ্গি আস্তানার প্রধান ও ৩ জুলাই রূপগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার আসামি। জাবেদ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ মুসিবপুরের আতর মিয়ার ছেলে।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে গুলশান বারিধারা সোহরাওয়ার্দী অ্যাভিনিউয়ে এটিইউ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এটিইউ’র পুলিশ সুপার (অপারেশনস) মো. সানোয়ার হোসেন।
এটিইউ বলছে, গ্রেপ্তার জাবেদ হোসেন পলাতক সহযোগীদের সহায়তায় নেত্রকোনায় ‘আনসার আল ইসলাম’র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেয়। সেখানে বোমা তৈরিতে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে রূপগঞ্জের ভাড়া বাসায় বোমা তৈরি করে আসছিল।
সেই বোমা ব্যবহারে দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে প্রস্ততি গ্রহণ করে আসছিল জাবেদ।
পুলিশ সুপার মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, গত ৯ জুন নেত্রকোণা মডেল থানাধীন ৭ নং কাইলাটি ইউনিয়নের বাসাপাড়া গ্রামের স্থানীয় একটি খামারবাড়ি ভাড়া নিয়ে মত্স্য খামার পরিচালনার অন্তরালে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র একটি বড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ধান পায় এটিইউ। এটিইউ’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিম সেখানে অভিযান পরিচালনা করে আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও তাজা গুলি, ওয়াকি-টকি সেট, হাতকড়া, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ উগ্রবাদী প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
এরপর নেত্রকোণা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় গত ৩০ জুন কক্সবাজার সদর থানা এলাকা থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নারী সমন্বয়কারী পারভীন আক্তারকে (২৪) গ্রেপ্তার করে এটিইউ।
পারভীন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানাধীন বরপা এলাকার একটি বাসায় জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হয় মর্মে তথ্য দেন। পরে এটিইউ’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম ও সোয়াট টিম জাবেদ হোসেনের বর্তমান বরপা এলাকার ভাড়া বাসাটিতে অভিযান পরিচালনা করে ৩টি তাজা আইইডি (বোমা), বোমা তৈরির বিভিন্ন উপাদান ও সরঞ্জামাদিসহ ছোরা, চাপাতি, ডায়রি, মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড উদ্ধার করে।
এসপি সানোয়ার বলেন, জাবেদ হোসেন পলাতক সহযোগীদের সহায়তায় নেত্রকোণায় আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে বোমা তৈরিতে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। অভিজ্ঞতার কারণে তিনি তার নিজ ভাড়া বাসায় বোমা তৈরি করে আসছিলেন। তিনি এবং তার সহযোগীরা বোমা ব্যবহার করে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে প্রস্ততি গ্রহণ করে আসছিলেন।
বরপা এলাকায় জাবেদ হোসেনের ভাড়া বাসায় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে অবস্থান করতেন এবং গোপন বৈঠকসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন বলে দাবি করে এটিইউ’র এ কর্মকর্তা। গ্রেপ্তার জাবেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ