জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৩২ জনকে জামিন দিয়েছে বান্দরবান জেলা দায়রা জজ আদালত। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বান্দরবানের জেলা ও দায়রা জজ মোসলে উদ্দিন এদের জামিন মঞ্জুর করেন।
পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’র আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেওয়া ও জঙ্গি তৎপরতা চালানোর অভিযোগে গত বছর তাদের বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করেছিল র্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।
মোট চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো এই ৩২ জনকে মঙ্গলবার জামিন দেওয়া হয়। এর মধ্যে বান্দরবানের থানচি থেকে ২১, রুমা থেকে ৪, নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ২ ও বান্দরবান সদর থেকে ৫ জনকে সে সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেওয়া ও বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি তৎপরতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। কেএনএফের সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে সে সময় র্যাব অভিযান চালিয়ে এদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে।
এর মধ্যে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার প্রশিক্ষক ও অর্থ শাখার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও ছিলেন বলে সে সময় র্যাব গণমাধ্যমকে জানায়। জামিন পাওয়া সদস্যরা হলেন- সিলেটের মাকসুদুর রহমান, কুমিল্লার সালেহ আহমদ, সিলেটের সাদেকুর রহমান, কুমিল্লার বায়েজিদ ইসলাম, নোয়াখালীর নিজাম উদ্দিন হিরন, মাদারীপুরের আবুল বাশার মৃধা, কুমিল্লার ইমরান হোসেন, নারায়ণগঞ্জের আল আমিন সর্দার, কুমিল্লার দিদার হোসেন, সিলেটের তাহিয়াত চৌধুরী, ঝালকাঠির হাবিবুর রহমান, কুমিল্লার সাখাওয়াত হোসেন, পটুয়াখালীর মিরাজ সিকদার, পটুয়াখালীর আল আমিন ফকির, বরিশালের আবদুস সালাম, পটুয়াখালীর ওবাইদুল্লাহ হক, বরিশালের মাহামুদ ডাকুয়া, পটুয়াখালীর জুয়েল মুসল্লি, পটুয়াখালীর শামীম, মুন্সীগঞ্জের রিয়াজ শেখ, বরগুনার সোহেল মোল্লা, টাঙ্গাইলের ইলিয়াছ রহমান, কুমিল্লার জহিরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের আবু হোরায়রা, কুমিল্লার দিদার হোসেন মাসুম, চট্টগ্রামের ইমরান হোসেন, কুমিল্লার আহাদুল ইসলাম মজুমদার, কুমিল্লার আনিছুর রহমান, গাইবান্ধার শামীন মাহফুজ, কুমিল্লার আসসামী রহমান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আলমগীর চৌধুরী দাবি করেন, বিনা অপরাধে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এদের আটক করে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদেরকে হয়রানি করার উদ্দেশে আটক করে জঙ্গির তকমা লাগায়। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কোনও অভিযোগ না পাওয়ায় আদালত তাদের জামিন দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বান্দরবানে সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ তৎপরতা শুরু করে। পরে তাদের আস্তানায় অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণ নেয় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার সদস্যরা।
সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন