নারী নির্যাতনের অভিযোগে অর্ন্তবর্তী সরকারের ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার দুপুরে মুয়াজের সাবেক স্ত্রী মাধবী আক্তার নীলা নিজে বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম। তিনি বলেন, নির্যাতনের অভিযোগে রমনা থানায় একজন ভুক্তভোগী নারী মুয়াজ আরিফের বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে নারী নির্যাতন আইনে মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। মামলাটিতে ওই নারী মুয়াজ আরিফকে একমাত্র আসামি বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি মুয়াজ আরিফ আমাদের বর্তমান সরকারের ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে। ও নির্যাতনের স্বীকার হয়ে মামলা করা নারী মাধবী আক্তার নীলা তার সাবেক স্ত্রী। আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
নীলা বলেন, গত ২৯শে নভেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে নিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে মুয়াজ। সাবেক স্ত্রী হয়া সত্ত্বেও আমাকে সেক্সুয়ালি হ্যারাসমেন্ট, ব্যাড টাচ করেছে সে। আমার পেটে চাকু মেরেছে। আমার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেছে। এরই প্রেক্ষিতে রোববার রাতে আমাকে নির্যাতনের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর পুলিশ যখন দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তি মুয়াজ আরিফ উপদেষ্টা হাসান আরিফের ছেলে, তখন সবাই উঠে চলে যায়। সারা রাত রমনা থানায় অবস্থান করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। সকালেও নেয়নি। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের তোপের মুখে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। তিনি বলেন, মুয়াজ আরিফের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছয় বছরের। আমাদের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। ২০২১ সালে ২৯শে এপ্রিল আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। ডিভোর্সের পর আমাকে কারাগারে যেতে হয়। কারাগার থেকে বের হয়ে আমি ২০২১ সালে বড় মেয়েকে আটকে রাখার অভিযোগে রিট করছিলাম। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশ ছিল বাচ্চা ছেলেটা আমার কাছে থাকবে। মাসিক ১ লাখ টাকা খরচা দেবে। কিন্তু বাচ্চাও পাইনি, খরচাও পাইনি। বড় মেয়েটা আমার কাছে থাকে। সে মানসিকভাবে অসুস্থ। সাইকিয়াট্রিস্ট চিকিৎসক বলেছেন তার সুস্থতার জন্য পারিবারিক আবহ দরকার। সেজন্য গত ২৯শে নভেম্বর সুইমিং করাতে ঢাকা ক্লাবে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার সাবেক স্বামী মুয়াজ তার এক বন্ধুর টোকেনে মেয়েকে সুইমিংয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। আর হোটেলে রুম বুকিং করে। আমাকে সেই রুমে নিতে প্ররোচিত করে। আমি যেতে আগ্রহী ছিলাম না। এরই জেরে আমাকে এমন নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে। এখন আমাকে অফার করা হচ্ছে মীমাংসার জন্য। আমি ন্যায়বিচার চাই। এ জন্য হাসান আরিফের সঙ্গে মীমাংসায় বসতেও রাজি। কিন্তু প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতনের বিচার হতে হবে। ২০১৮ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত যে সময় গেছে সেটা ফিরিয়ে দিতে হবে।
সুত্রঃ মানবজমিন