বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ‘স্বপ্নাদেশ’ পেয়ে চার মাসের পুত্রসন্তানকে হত্যা করে উধাও হয়েছেন এক গৃহবধূ। নিহত শিশুর নাম জুবায়ের আহম্মেদ তালুকদার। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য শিশুর লাশ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত শিশু জুবায়ের ওই গ্রামের সাগির তালুকদারের ছেলে। মা ছালেহা বেগম পলিকে (৩৭) পুলিশ ও স্বজনরা খুঁজে পাচ্ছেন না।
নিহতের বাবা গরুর খামারি সাগির তালুকদার জানান, তিনি তিন ছেলে ও এক কন্যাসন্তানের জনক। প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে ছোট ছেলে জুবায়ের আহম্মেদকে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী পলি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি জেগে স্ত্রী ও ছেলেকে বিছানায় না পেয়ে পবিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করেন।
পরে গরু ঘরের পাশে বড় বালতির মুখ একটি গামলা দিয়ে ঢাকা দেখতে পান। তখন ওই বালতির মুখের গামলা সরিয়ে ফেললে দেখতে পান, পানিভর্তি বালতির মধ্যে জুবায়েরের মাথা নিচে ও পা দুটো ওপরের দিকে। পরে বালতির ভেতর থেকে জুবায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তারা।
স্বামীর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এসে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার স্ত্রী পলির সন্ধান পাননি। সাগর আরও জানান, ছেলে জুবায়ের আহেম্মদ জন্মের পর থেকে তার স্ত্রী পলি স্বপ্নাদেশ পেয়ে খাসি ছদগাহ্ ও মনসা মন্দিরে দুধ কলা দেয়। এর পর তার স্ত্রী প্রায়ই স্বপ্নাদেশ পেয়ে ঘুমের ঘরে চিৎকার করে উঠত। এর পর থেকে পলি আমাদের কাছে স্বপ্নাদেশের কথা বলত, তাকে (পলি) সাপ ধাওয়া করে ও আঁকড়ে ধরেছে।
সাগর আরও জানান, তার স্ত্রী পলি স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রায়ই বলে আসছিলেন জুবায়ের বেঁচে থাকলে সংসারে শান্তি হবে না। এমনকি দুই সন্তানকে আছড়ে মেরে ফেলবে। নিহতের বড় বোন সাগরিকা বেগম (২০) জানান, তার ছোট ভাই জুবায়ের জন্মের পর থেকেই তার মা প্রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে আবোলতাবোল বলতেন। এ জন্য তাকে (পলি) অনেক ঝাঁড়ফুক দেওয়া হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, চার মাস বয়সের শিশু জুবায়ের আহম্মেদের লাশ রাতেই উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রোববার দুপুর দেড়টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা সাগির তালুকদারকে বাদী করে ঘাতক স্ত্রী ছালেহা বেগম পলিকে আসামি করে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। ঘাতক মাকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি আফজাল হোসেন জানান।
সুত্রঃ যুগান্তর
3 comments
ধর্মান্ধতা আর কুসংস্কার আমাদের সমাজে এখন বিদ্যমান। যার কারণে সমাজে এতো বিসৃংখলা পতিত হয়ে আছে
মহিলা কুসংস্কার মধ্যে আছে জেনে স্বামী কেন ব্যবস্থা নিল না
মহিলা কুসংস্কার ও মানুষিক সমস্যা নিয়ে সবাই কে বলত তখন ডাক্তারের পরার্মশ গ্রহন করা উচিত ছিল