ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে স্বজন হারানোর বেদনা প্রতিনিয়ত তীব্রতর হচ্ছে। সেখানে বসবাসরত অধিকাংশ পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। ৩৮ হাজারের বেশি শিশু অনাথ হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহের আল-ওয়াহিদি জানিয়েছেন, প্রায় ৩২ হাজার ১৫১ শিশু তাদের বাবা হারিয়েছে, চার হাজার ৪১৭ শিশু মা হারিয়েছে। বাবা কিংবা মা হারিয়েছে ৩৬ হাজার ৫৬৮ শিশু। বাবা-মা দুজনকেই হারিয়ে বাকরুদ্ধ আরও ১ হাজার ৯১৮ শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব জানিয়েছে।
তারা এখন তীব্র শূন্যতা আর একাকিত্বের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে। তাদের অধিকাংশই এখন একা নিঃসঙ্গ। বেঁচে যাওয়া এসব শিশুদের চোখে-মুখে ফুটে স্পষ্ট সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি। একেকটি শিশু, যারা কিছুদিন আগ পর্যন্ত মা-বাবার আদর-ভালোবাসায় বেড়ে উঠছিল, আজ তাদের মুখে শুধু শূন্যতা, দুঃখ এবং ভয়। আপনজন হারানোর বেদনাই এখন তাদের পথের সঙ্গী।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং জিম্মি বিনিময় শুরু হলেও শেষ হয়নি গাজার আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা, যা কেবলই বেড়ে চলেছে। যুদ্ধের ১৫ মাসে প্রতিদিন কয়েক শত পরিবার তাদের প্রিয়জন হারিয়ে শোকে স্তব্ধ এবং নিঃস্ব হয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে মানবিক ক্ষয়ক্ষতির ক্ষত ফুটে না উঠলেও যুদ্ধ শেষে ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট দগদগে ক্ষত নতুন করে উঠে আসছে হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ কেবল গাজার শিশুদের শারীরিক ক্ষতিই করেনি, বরং তাদের মনেও গভীরভাবে আঘাত হেনেছে।
গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা আগে ফিলিস্তিনিদের আশা এবং উন্নতির প্রতীক এক আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের রিলিফ এজেন্সি ইউএনআরডব্লিউএ জানাচ্ছে, প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার শিশু এখন স্কুলে যেতে পারছে না, আর ১৪ হাজার ৫০০ শিশুর জীবনযুদ্ধ চিরতরে থেমে গেছে। ভবিষ্যতের সঞ্চয়, আশার আলো সবকিছুই এখন অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে।
উৎসঃ চ্যানেল ২৪ ডট কম